পরী
ইন্ডিয়ার সীমান্ত ঘেঁষে ছোট, একটা গ্রাম কুসুমপুর ৷ চারপাশে গাছপালা আর ধান ক্ষেতের অপরূপ এক গ্রাম ৷
গ্রামের একপাশে কল-কল শব্দে বয়ে চলছে নদী ৷ নদীর ওপাড়ে ইন্ডিয়ার বর্ডার ৷
ইন্ডিয়ার উঁচু নীচু পাহাড় গুলোতে আঁধার নামলেই জ্বলে উঠে শত, শত, জোনাকি পোকার আলো ৷
টিমটিমে আলো জ্বেলে যেনো উৎসবে মেতে উঠে তারা ৷
,
মূল শহর থেকে সেখানে যেতে প্রায় ৬ ঘন্টার মত, সময় অতিবাহিত, হয় ৷
প্রথমে বাসে করে, তারপর সি,এন,জি'তে, চড়ে আসতে হয় সন্ধা বাজার পর্যন্ত ৷
সন্ধা বাজার থেকে ব্যাটারি চালিত, অটো রিক্সায় চড়ে আসতে হয় মঞ্জিলা বাজার নামক ছোট, আরেকটা বাজারে ৷
সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে আসতে হয় কুসুমপুর গ্রামে ৷
কুসুমপুর গ্রামের রাস্তাটা নদীর তীর ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে ৷
যার কারণে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে পিচ্ছিল, হয়ে পড়ে ৷
তখন পথচারীদের জন্য পথ, চলা হয়ে উঠে অনেক কঠিন ৷ পা পিছলে পরলেই সোজা নদীতে ৷
সেখানে আমার এক দূর-সম্পর্কের ভাই ওনার পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ৷
বেশ কিছুদিন আগে আমি ছোট, একটা সমস্যায় পড়ে সেখানে গিয়েছিলাম, কয়েকদিন থাকার জন্য ৷
প্রথম প্রথম অনেক ভালো লাগে জায়গাটা ৷ কিন্তু কিছুদিন পর, কেমন একটা অস্বস্তি গ্রাস করে আমায় ৷
আমি প্রতিদিন রাতে নদীর তীরে বসে রাতের সুন্দর্য উপভোগ করতাম ৷
কল-কল শব্দে বয়ে চলে নদীর পানি যেনো অদ্ভূত এক মন মাতানো সুর সৃষ্টি করতো ৷
মাঝেমাঝে দমকা হাওয়া এসে মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিতো ৷
সেই দমকা হাওয়ার সাথে প্রতিরাতেই একটা মন-মুগ্ধকর ঘ্রাণ ভেসে আসতো ৷
প্রথম প্রথম ঘ্রাণটার প্রতি এতটা গুরুত্ব দিতাম না ৷ কিন্তু প্রতিরাতে এমন অদ্ভূত ঘ্রাণ ভেসে আসায় ব্যাপারটা কেমন অন্যরকম মনে হলো ৷
দিনেরবেলা যখন নদীর তীরে আসতাম তখন কোন, ধরনের ঘ্রাণ পেতাম না ৷
অদ্ভূত এই ঘ্রাণটা কিসের ? কোথা থেকেই বা ভেসে আসে সেটা জানার আগ্রহ, প্রবল, ভাবে পেয়ে বসলো আমায় ৷
মনে মনে ঠিক করে নিলাম আবার যখন ঘ্রাণটা পাবো তখন খুঁজে দেখবো কোথা থেকে আসে ৷
,
প্রতিদিনকার মতো রাত ১১ টার দিকে আসলাম নদীর তীরে ৷
নদীর মাঝখানটায় চাঁদটার দিকে স্থির হয়ে তাঁকিয়ে আছি ৷
হঠাৎ..... তাঁকিয়ে দেখি নদীর মাঝখানটায় যেখানে চাঁদটা হাসছে সেখানে কালো আঁধারের মতো কী যেনো চাদঁটাকে জড়িয়ে ধরলো ৷
গিলে ফেলতে চাইছে চাঁদটাকে ৷ ভয়ে শরীর জমে গেলো মনে হচ্ছে ৷
আকাশের ঠিক পশ্চিমের পাশটায় তাঁকিয়ে দেখি চাঁদ এবং মেঘের লুকোচুরি খেলা চলছে ।
মনে মনে হাসলাম নিজের বোকামী দেখে ৷ না কালকে বেশ বৃষ্টি হবে মনে হচ্ছে ৷ বড় করে মেঘ জমেছে আকাশে ৷ চারদিকে কিছুটা অন্ধকার ও ছেয়ে গেছে ।
এমন সময় দক্ষিণের দমকা হাওয়ার সাথে ভেসে আসলো অদ্ভূত সেই ঘ্রাণটা ৷
ঘ্রাণটা নাকে লাগতেই উঠে দাঁড়ালাম ৷ তারপর সোজা হাঁটতে লাগলাম দক্ষিণে ৷
বেশ কিছুদূর আসার পর, ঘ্রাণটার তীব্রতা যেনো আরো বেড়ে গেলো ৷
যতো সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম ততো ঘ্রাণটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিলো ৷
আরো কিছুদূর আসার পর, চোখে পড়লো এক অদ্ভূত দৃশ্য ৷
আমার থেকে কিছুটা দূরে নদীর দিকে তাঁকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক নারী মূর্তি ৷
পড়নে ধবধবে সাদা জামা, খোলা চুলগুলো বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে ৷
মেয়েটির শরীর থেকে বেড়িয়ে আসছে উজ্জ্বল আলো, সেই আলোর সাথে অদ্ভূত ঘ্রাণটাও মেয়েটির শরীর থেকেই আসছে ৷
এসব দেখে আমি হতভম্ব হয়ে একদৃষ্টে তাঁকিয়ে রইলাম সেদিকে ৷
কতক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম মনে নেই ৷ হঠাৎ,, মেয়েটি আমার দিকে ফিরে তাঁকালো ৷
মেয়েটির চোখের চাহনিতে আমি যেনো মন্ত্র-মুগ্ধে পড়ে গেলাম ৷
অপরূপ সুন্দর চেহারায় যেনো মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করছে দুটো চোখ ৷ ঠোঁট দুটো যেনো সদ্য ফুটা গোলাপের পাপড়ি ৷
আমি চমকিত, নয়নে তাঁকিয়ে রইলাম মেয়েটির দিকে ৷
,
কতক্ষণ এভাবে ছিলাম সেটা বলতে পারিনি ৷ হঠাৎ মনে হলো এই মেয়েটি কোন, সাধারণ মানুষ হতেই পারে না ৷
সাধারণ কোন, মানুষের শরীর থেকে এভাবে আলো ছড়ানো কখনোই সম্ভব নয় ৷
বেশ কিছুক্ষন পর, একটু স্বাভাবিক হলে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করলাম,,
- কে আপনি ? এতো রাতে এখানেই বা কী করছেন ?
,
সুমধুর কন্ঠে মেয়েটি জবাব দিলো,,
- আমি ''জান্নাত'' প্রতিরাতেই আমি এখানে আসি ৷ জায়গাটা আমার ভিষন ভালো লাগে ৷
,
- আমি তো অনেকদিন থেকে এই গ্রামে আছি ৷ কিন্তু আপনাকে তো কখনো দেখিনি ৷
,
- আমি এই গ্রামে থাকি না ৷ আর আমি কোন, মানুষ জাতি ও নই ৷
,
আমি প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলাম মেয়েটি অন্যকিছু হবে ৷ তাই ভয় না পেয়ে স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞাসা করলাম,,
- তাহলে আপনি কী ?
,
মেয়েটি শান্ত ভাবে জবাব দিলো,,
- আমি জ্বীন জাতি ৷ মানুষরা আমাদের নাম দিয়েছে পরী ৷
,
মেয়েটি জ্বীন জাতি শুনেও ভয় পাইনি ৷ কারণ জানি ভয় পেলে ওরা আরো বেশী করে মানুষদের ভয় দেখায় ৷
- তাহলে সব পরীরাই কী এতো সুন্দর হয় ?
,
আমার কথায় মেয়েটি হেসে জবাব দিলো,,,
- না আমরা জ্বীন জাতি দেখতে মোটেও সুন্দর নই ৷
আমরা সবাই দানব আকৃতির, কুৎসিত, অতি, ভয়ংকর রূপের অধিকারী হয়ে থাকি ৷
আমাদের বাস্তব রূপ যদি কোন, মানুষ দেখে সে যদি ভীতু হয় তাহলে ভয়েই মারা যাবে ৷
আমরা বিভিন্ন পশু-পাখির রূপ ধারণ করে থাকি এমনকী মানুষের রূপ ও ধারণ করতে পারি ৷
,
- আচ্ছা আপনারা মানুষদের ভয় দেখান কেনো ৷
,
- মানুষ জাতির মধ্যে যেমন ভালো খারাপ আছে ৷ তেমনি আমাদের জ্বীন জাতির মধ্যেও ভালো খারাপ আছে ৷
আর সেই খারাপ জ্বীনরাই অনেকসময় মানুষদের বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখায় ৷
কিন্তু যারা সাহসী তাঁদের ভয় দেখাতে পারে না খারাপ জ্বীন গুলো ৷
,
এভাবে আরো অনেক কথা হলো মেয়েটির সাথে ৷ ফজরের আজানের সময় হলে মেয়েটি চলে গেলো ৷
আমিও চলে আসলাম ঘরে ৷ নামাজ পড়ে এসে বিছানায় শুতেই দুচোখের পাতায় নেমে আসলো ঘুম ৷
,
পরদিন ঘুম ভাঙ্গলো দুপুর ১২ টার দিকে ৷ ঘুম ভাঙ্গতেই মনে পড়লো আজ শহরে একটা কাজে যাবার কথা ছিলো ৷
তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম বাড়ি থেকে ৷
সন্ধে নামার আগেই পৌছে গেলাম শহরে ৷ সেখানের কাজ শেষ করে যখন সন্ধবাজার আসলাম তখন রাত ১ টা ৩০ মিনিট ৷
দোকানপাট তেমন একটা খুলা নেই দুএকটা যা আছে সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে কিছুক্ষন পর, ৷
একটাও গাড়ি দেখতে পেলাম না বাজারে ৷ এদিকে কুসুমপুর গ্রামে যেতে হলে প্রায় ছয় কিলোমিটার জায়গা হেঁটে যেতে হবে ৷
এতটা পথ, একা একা হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয় ৷ আবার ঘুরে শহরের দিকেও যেতে পারবো না ৷
প্রথমে ভাবলাম হেঁটে চলে যাবো কিন্তু ক্লান্ত শরীর সায় দিলো না এতটা পথ, হাঁটতে ৷
মনে মনে ঠিক করলাম বাজার থেকে কিছুটা দূরে একটা মসজিদ আছে সেখানে রাতটা পাড় করে দিবো ৷
হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম মসজিদে ৷ আসার সময় দু-প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে নিলাম খাবার জন্য ৷
মসজিদের ভিতরে ঢুকে একপাশে গিয়ে বসে এক প্যাকেট বিস্কুট খাবার পর, আর খেতে মন চাইলো না ৷
অন্যটা পাশে রেখে দেয়ালে হেলান দিয়ে চোখ বুজে বসে রইলাম ৷
এভাবে বসে থেকে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বলতেই পারিনি ৷
হঠাৎ কিছু একটার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো তখনো চোখ বন্ধ ছিলো ৷
মসজিদের অন্যপাশ থেকে কারো কথা বলার শব্দ শুনতে পেলাম ৷
চোখ মেলে তাঁকিয়ে দেখলাম ১০ ১২ জন হুজুর গোলাকার হয়ে বসে কথা বলছেন ৷
সবার পড়নে সাদা পান্জাবী সাদা টুপি ৷ মুখ ভর্তি লম্বা সাদা দাড়ি ৷ সবাই সুদর্শন চেহারার অধিকারী ৷
কিন্তু ওনারা কী কথা বলছেন তার এক বিন্দু বুঝতে পারলাম না আমি শুধু সেখান থেকে ভেসে আসছে ঘম-ঘম শব্দ ৷
ভাবলাম হয়তো ফজরের আজানের সময় হয়ে গেছে তাই ওনারা নামাজ পড়তে এসেছেন ৷
এখন গেলে গাড়ি পাওয়া যাবে মঞ্জিলা বাজারের তাই আর বসে না থেকে উঠে দাঁড়ালাম ৷
আমার উপস্থিতি টের পেয়ে ওনারা কথা বলা বন্ধ করে সবাই আমার দিকে ফিরে তাঁকালেন ৷
আমি ওনাদের সালাম দিয়ে বেড়িয়ে আসলাম মসজিদ থেকে ৷
মসজিদের পুকুরে মুখ ধুয়ে সোজা চলে আসলাম বাজারে ৷
বাজারে এসে অবাক হয়ে গেলাম ৷ গাড়ি তো দূরের কথা একটা মানুষও নেই কোথাও ৷
মোবাইল হাতে নিয়ে আঁৎকে উঠলাম ৷ রাত মাত্র ২ টা ৪৫ বাজে ৷
আজান হতে আরো অনেক সময় আছে ৷ তাহলে মসজিদে দেখা ঐ হুজুররা এতো তাড়াতাড়ি কেনো আসলেন ৷
হঠাৎ একটা কথা মনে হতেই শরীরে যেনো ঠান্ডা একটা শ্রুত বয়ে গেলো ৷
শুনেছি ভালো জ্বীনরা রাতে নামাজ পড়তে মসজিদে আসেন ৷ তাঁদের বলা হয় ''জ্বীন্নেমুমিন'' ৷
তাহলে কী এই মাত্র যাদের দেখলাম ওরা কেউ মানুষ নয় ?
এটাও শুনেছিলাম ওনারা কারো ক্ষতি করেননা, তবুও আর মসজিদে যাবার সাহস হলো না ৷
দ্রুত, হাঁটতে লাগলাম কুসুমপুর গ্রামের রাস্তা ধরে ৷
প্রায় ঘন্টাখানেক হাঁটার পর, রাস্তার পাশে দেখতে পেলাম সাদা একটা বিড়াল ৷
বিড়ালের প্রতি দুর্বলতা আমার সবসময়ই বেশী ৷
যেখানেই যাই সেখানেই একটা না একটা বিড়াল পুষি ৷
এই বিড়ালটাকে দেখে মায়া লেগে গেলো রাস্তার পাশে বসে করুণ সুরে ডেকেই চলছে ৷
ওটার পাশে যেয়ে বসে বুঝতে পারলাম বিড়ালটা আগাতপ্রাপ্ত ৷
বিস্কুটের প্যাকেটটা ছিঁড়ে বিড়ালটার সামনে রাখতেই খেতে লাগলো ৷
সেখানে বসে রইলাম অনেকক্ষণ, হঠাৎ পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো,,
- কে বাবা তুমি ? এতো রাতে এখানে বসে কী করো ?
,
আচমকা কারো কথার শব্দে সাথে সাথে পিছন ফিরে তাঁকিয়ে দেখতে পেলাম একজন বৃদ্ধ লোক দাঁড়িয়ে আছেন ৷
আমি বললাম,,
- আমাকে চিনবেন না চাচা ৷ আমি কুসুমপুর গ্রামে এসেছি বেড়াতে ৷
শহর থেকে আসতে আসতে রাত হয়ে গেছিলো তাই হেঁটেই যাচ্ছিলাম ৷
এই বিড়ালটােক এখানে পড়ে থাকতে দেখে বিস্কুট খেতে দিয়েছিলাম ৷
,
বৃদ্ধ বললেন,,
- এই বয়সে কী তোমার মাথা নষ্ট হয়ো গেলো ? এখানে বিড়াল কোথায় পেলে ?
,
আমি সাথে সাথে ঘুরে ওনাকে দেখাতে যাবো তখনি দেখলাম যে কোথায় কী বিড়ালটা নেই শুধু পড়ে আছে বিস্কুটের প্যাকেটটা ৷
তখনি মসজিদের মাইক থেকে ভেসে আসলো আজানের মিষ্টি ধ্বনি ৷
বৃদ্ধ লোকটি আমার মাথায় হাত দিয়ে কী যেনো পড়ে শরীরে ফু দিয়ে বললেন যাও বাবা বাড়িতে আমি সব বুঝতে পেরেছি ৷
আমিও আর সেখানে না দাঁড়িয়ে হাঁটতে লাগলাম বাড়ির দিকে ৷
বাড়িতে পৌছে ক্লান্ত অবসন্ন দেহ, এলিয়ে দিলাম বিছানায় ৷
রাতের কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বলতে পারিনি ৷
যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন প্রায় সন্ধে হয়ে গেছে ৷ উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে সবার সাথে গল্পগুজব করতে করতে রাত হয়ে গেলো ৷
আগেররাতে আমার সাথে কী কী ঘটেছিলো তার কিছুই বললাম না কারো কাছে ৷
সবাই একসাথে খেয়ে যে যার ঘরে ঘুমাতে চলে গেলো ৷
আমি প্রতিরাতের মতো চলে আসলাম নদীর তীরে ৷
নদীর তীরে আসতেই মনে পরলো মেয়েটির কথা ৷ তার মধ্যে আর একবারো মনে পড়েনি ৷
আমি ধীরে ধীরে হেঁটে চলে আসলাম সেই জায়গায় যেখানে মেয়েটির সাথে দেখা হয়েছিলো ৷
কিন্তু সেখানে এসে দেখতে পেলাম না মেয়েটিকে ৷ ভাবলাম হয়তো আরো পরে আসবে তাই সেখানে বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম ৷
,
মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর মেয়েটি না আসায় ৷ ভাবলাম হয়তো আজ আর আসবে না তাই ঘরে চলে যাবো ঠিক করলাম ৷
উঠে ঘুরে দাঁড়াতেই দেখতে পেলাম মেয়েটিকে আমার ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে আছে ৷
আজ কেমন যেনো মলিন দেখাচ্ছে মেয়েটিকে ৷ জিজ্ঞাসা করলাম,,,
- আজ আসতে এতো দেরী করলেন যে ?
,
মেয়েটি কান্নাজরিত, কন্ঠে জবাব দিলো ৷
- আমি আর এখানে আসবো না ৷ আজ শুধু আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছি ৷
,
আমি অবাক হয়ে বললাম,,
- ধন্যবাদ কিসের জন্য ?
,
মেয়েটি বললো,,
- কাল রাতে আপনি একটা বিড়ালকে বিস্কুট খাইয়েছিলেন সেটা আমার বোন ছিলো ৷
সেই সময় কিছু খারাপ জ্বীন আমার বোনকে মারার চেষ্টা করছিলো ৷
তখন আপনি সুরা-কালাম পড়তে পড়তে সেই পথ, দিয়ে আসছিলেন তাই খারাপ জ্বীনগুলো পালিয়ে যায় ৷
কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছিলো খুব বেশী আগাতপ্রাপ্ত ছিলো তখন ৷ আজান হবার কিছুক্ষন আগে ওর মৃত্যু হয় ৷
,
এতটুকু বলে চোখের পলকে মেয়েটি অদৃশ্য হয়ে যায় ৷ আমি আর কিছু বলতেও পারিনি ৷
আরো কিছুক্ষন সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে চলে আসি ঘরে ৷
,
সেদিনের পর, থেকে আর কোনদিন দেখিনি মেয়েটিকে ৷
কিন্তু আমি যখনি কোন, বিপদে পরি তখনি অদ্ভূত ভাবে সেই বিপদ থেকে বেঁচে যাই ৷
আর প্রতিবারই সেই অদ্ভূত ঘ্রাণটা বলে দেয় ৷ কে আমাকে বিপদ থেকে বাঁচালো ৷
No comments